রাষ্ট্রপতির কাছে আওয়ামী লীগের ৪ প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের হাতে লিখিত প্রস্তাব হস্তান্তর করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের হাতে লিখিত প্রস্তাব হস্তান্তর করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে চলমান সংলাপের ১৭তম দিনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন আইন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা ও নির্বাচনের প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসে। এ সময় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নসহ চার দফা প্রস্তাব দেয় আওয়ামী লীগ। বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এসব প্রস্তাব সম্পর্কে জানান।

যে সব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে:

১। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারের নিয়োগ দেবেন। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি (রাষ্ট্রপতি) যাদের উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, তাদেরই নিয়োগ দান করবেন।

২। সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ইভিএম পদ্ধতিসহ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। প্রতিনিধিদল একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনকালীন নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বশীলতা, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের আচরণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা ও ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরে।

৩। নির্বাচন পরিচালনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহারের পরিবর্তে কেবল প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ এবং আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত লোকজনের দায়িত্বশীল ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেন।

৪। নির্বাচনে পেশিশক্তির প্রয়োগ বন্ধ ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সব পর্যায়ের ভোটারদের ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করা ও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। লিখিত প্রস্তাবনায় তারা নির্বাচনের দিন, নির্বাচনের পূর্বে এবং পরে ভোটারদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের আবশ্যকীয় সব সংস্থা ও নির্বাচন কমিশন অবশ্যই একটি রুটিন ওয়ার্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ আয়োজন করার জন্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে ধন্যবাদ জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে তার দল ও সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ইতোমধ্যে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইনটিতে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান। যত দ্রুত সম্ভব এ আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এই আইনেই জনমতের প্রতিফলন ঘটবে।’

গত ২০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সংলাপের প্রথম দিনে বসে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। মোট ৩২ রাজনৈতিক দলকে বঙ্গভবনে আলোচনার জন্য আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)সহ সাতটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ নেয়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title