ঢাকা ০৯:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজ মহান মে দিবস

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৩১:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১ ১১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণ ও রক্তাক্ত ঘটনার স্মৃতিবিজড়িত মে দিবসের ডাক এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার ও জীবনমানের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন করে এলেও পুঁজি বিকাশের তুলনায় শ্রমিক শ্রেণির অবস্থার তেমন পরিবর্তন ঘটেনি। প্রতিবছর বিশ্বে ঘটা করে মে দিবস পালিত হলেও করোনার দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণের কারণে বিশ্বজুড়ে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। বিশ্বের সব মানুষ জীবনের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে থাকলেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। ফলে মে দিবস এবার এক ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হচ্ছে। লকডাউনের মধ্যে বাংলাদেশে মে দিবস ঘটা করে পালনের সুযোগ নেই। একদিকে কোটি কোটি মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়া, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের দিশেহারা অবস্থা। দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়াই এখন তাদের জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছে। বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে তাদের এখন ত্রাহি অবস্থা। হু হু করে বাড়ছে দারিদ্র্যের হার। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতোমধ্যে নতুনভাবে দুই কোটিরও বেশি মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। হতদরিদ্রের সংখ্যাও সমানুপাতে বাড়ছে।

এবারের মহান মে দিবসের প্রধানতম ব্রত হওয়া উচিৎ অসহায় খেটে খাওয়া শ্রমিক-মজুর এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা। করোনা যেমন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তেমনি সাধারণ মানুষকে খাদ্য ও অর্থ প্রদান করে সহায়তা করতে হবে। সরকার তার অবস্থান থেকে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সহায়তায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারের একার পক্ষে এ সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। সামনে ঈদ। এই ঈদকে কেন্দ্র করে ধনিক শ্রেণীর উচিৎ যথাসম্ভব যাকাত, ফিতরা, অনুদান দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইসলামিক বিধানে এটা তাদের আবশ্যিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা দেখেছি, এই করোনাকালে অনেক শিল্পপতি, ধনী ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা তাদের ধন-সম্পদ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি। এ উপলব্ধি থেকে বিত্তবানদের উচিৎ বিপদগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসা। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিৎ কর্মরত শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করা। সরকারকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে জড়িত লাখ লাখ উদ্যোক্তা ও শ্রমিকের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ করে তাদের হাতে অর্থের যোগান দিতে হবে। তাতে তারা যেমন কিছুটা স্বস্তি পাবে তেমনি অর্থ প্রবাহও বাড়বে, যা অর্থনীতিতে কাজে আসবে। পরিশেষে মহান মে দিবসে আমরা সকল মেহনতী ও অসহায় হয়ে পড়া মানুষের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মীতা জ্ঞাপন করছি।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আজ মহান মে দিবস

আপডেট সময় : ০৬:৩১:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণ ও রক্তাক্ত ঘটনার স্মৃতিবিজড়িত মে দিবসের ডাক এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার ও জীবনমানের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন করে এলেও পুঁজি বিকাশের তুলনায় শ্রমিক শ্রেণির অবস্থার তেমন পরিবর্তন ঘটেনি। প্রতিবছর বিশ্বে ঘটা করে মে দিবস পালিত হলেও করোনার দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণের কারণে বিশ্বজুড়ে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। বিশ্বের সব মানুষ জীবনের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে থাকলেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। ফলে মে দিবস এবার এক ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হচ্ছে। লকডাউনের মধ্যে বাংলাদেশে মে দিবস ঘটা করে পালনের সুযোগ নেই। একদিকে কোটি কোটি মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়া, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের দিশেহারা অবস্থা। দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়াই এখন তাদের জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছে। বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে তাদের এখন ত্রাহি অবস্থা। হু হু করে বাড়ছে দারিদ্র্যের হার। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতোমধ্যে নতুনভাবে দুই কোটিরও বেশি মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। হতদরিদ্রের সংখ্যাও সমানুপাতে বাড়ছে।

এবারের মহান মে দিবসের প্রধানতম ব্রত হওয়া উচিৎ অসহায় খেটে খাওয়া শ্রমিক-মজুর এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা। করোনা যেমন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তেমনি সাধারণ মানুষকে খাদ্য ও অর্থ প্রদান করে সহায়তা করতে হবে। সরকার তার অবস্থান থেকে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সহায়তায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারের একার পক্ষে এ সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। সামনে ঈদ। এই ঈদকে কেন্দ্র করে ধনিক শ্রেণীর উচিৎ যথাসম্ভব যাকাত, ফিতরা, অনুদান দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইসলামিক বিধানে এটা তাদের আবশ্যিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা দেখেছি, এই করোনাকালে অনেক শিল্পপতি, ধনী ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা তাদের ধন-সম্পদ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি। এ উপলব্ধি থেকে বিত্তবানদের উচিৎ বিপদগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসা। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিৎ কর্মরত শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করা। সরকারকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে জড়িত লাখ লাখ উদ্যোক্তা ও শ্রমিকের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ করে তাদের হাতে অর্থের যোগান দিতে হবে। তাতে তারা যেমন কিছুটা স্বস্তি পাবে তেমনি অর্থ প্রবাহও বাড়বে, যা অর্থনীতিতে কাজে আসবে। পরিশেষে মহান মে দিবসে আমরা সকল মেহনতী ও অসহায় হয়ে পড়া মানুষের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মীতা জ্ঞাপন করছি।