করোনাভাইরাসে মৃত্যুর নিরিখে শীর্ষে আমেরিকা,চতুর্থ স্থানে ভারত

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: এক বছরেরও বেশি সময়ে করোনার উত্থান-পতনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। ভাইরাস প্রতিরোধী প্রতিষেধক এলেও থামেনি মৃত্যুর মহামিছিল। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী গোটা বিশ্বে করোনার বলি হওয়া মানুষের সংখ্যা ৩০ লক্ষের কোটা ছাড়িয়ে গেল। আমেরিকার জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার (১৭ এপ্রিল) পর্যন্ত গোটা বিশ্বে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৩০ লক্ষ ১ হাজার ৮৮৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, সারা বিশ্বে সক্রিয়ভাবে করোনা সংক্রমিত মানুষের সংখ্যাও পেরিয়ে গেছে ১৪ কোটির মাইলফলক।

চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে মৃত্যুর নিরিখে এই মুহূর্তে একেবারে শীর্ষে আমেরিকা। সেখানে করোনার প্রকোপে প্রাণ গিয়েছে ৫ লক্ষ ৬৬ হাজার ২২৪ জন মানুষের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে কোভিডে মৃত রোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ৭৪৯। ২ লক্ষ ১১ হাজার ৬৯৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যুতে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে মেক্সিকো। এই তালিকায় ভারত রয়েছে চতুর্থ স্থানে। এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৪৯ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে ভারতে। পঞ্চম স্থানে থাকা ব্রিটেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৭২।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, মহামারি সঙ্গে নিয়ে এক বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও, গত কয়েক মাসে হু হু করে মৃত্যুসংখ্যা বেড়েছে সর্বাধিক। ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ১০ লক্ষের আশপাশে ছিল। এ বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র পাঁচ মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে ২০ লক্ষ হয়। তার পর দু’মাস কাটেনি। তার মধ্যে ৩০ লক্ষের কোটা পেরিয়ে গেল মৃত্যুসংখ্যা। এতে করোনায় ক্রমশ ঊর্ধমুখী মৃত্যুর ভয়াল চিত্রই উদ্ভাসিত হচ্ছে।

২০১৯ সালের শেষ দিকে চীন থেকে যখন গোটা বিশ্বে করোনা থাবা বসাতে শুরু করে, তখন কিন্তু পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হতে পারে বলে আঁচ করতে পারেননি বিশ্বের বিশিষ্ট স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশও যে প্রবল মহামারির কবলে পড়বে, তা-ও আঁচ করা যায়নি। করোনায় বিশ্বব্যবস্থা তছনছ হয়ে ভয়ঙ্কর মানবিক বিপর্যয়ের কথাও কেউ ভাবেনি।

তবে, যতই দিন যাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি ততই আগ্রাসী ও প্রলয়ঙ্করী রূপ পরিগ্রহ করছে। মৃত্যু ও আক্রান্তের গতিও প্রবলবেগে বাড়ছে। ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা হয়ে করোনার তাণ্ডব এশিয়ায় বিস্তৃতি লাভ করছে।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, করোনা পেন্ডেমিকের প্রতিরোধে উন্নয়নশীল দেশগুলো যেখানে ভয়াবহতা কাটিয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, সেখানে উৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ উন্নত দেশগুলো। কারণ, মোট মৃত্যু ও সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে অতি-উন্নত আমেরিকাই শীর্ষে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৩ কোটি ১৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৫৪ জন নাগরিক কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুও পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার গঠিত হওয়ার পর নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও এখন পর্যন্ত আমেরিকার করোনা পরিস্থিতির তেমন উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title