চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর নাউরীতে প্রথমবারের মতো ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হয়েছেন গ্রীস প্রবাসী মামুন মিয়াজী। ইতোমধ্যে বাগানের ফল বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন তিনি। সামনে আরও লাভের আশা তাদের।
জানা গেছে, ১০ বছর পূর্বে ভাগ্যে চাকা ঘুরাতে কাজের সন্ধানে গ্রীস পাড়ি দেন মামুন মিয়াজী। ৬ মাসের ছুটিতে দেশে ফেরার সময় সঙ্গে করে ক্যাপ্সিকামের বীজ নিয়ে আসেন। বীজতলা করেন মামুন মিয়াজী টেতে। সেখান থেকে ৪শ’ চারা এক একর ২০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। দু-মাস পর থেকেই শুরু হয় ফল সংগ্রহ।
সাধারণত নভেম্বরে মাঝামাঝিতে বীজ ছিটানোর পর ডিসেম্বর থেকেই জমি তৈরি করে মালচিং পেপার দিয়ে চারা রোপণ শুরু হয়।
ক্যাপসিকাম চাষি মামুন মিয়াজী বলেন, বিদেশি এই ফসলের জন্য তাপমাত্রা লাগে ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এখানে অনেক সময় কম-বেশি হয়েছে। তবুও আমাদের ফলনের কমতি হয়নি। এ বছর বাংলাদেশের কোথাও ক্যাপসিকামের ভালো ফলন হয়নি, কিন্তু আমাদের ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি জানান, এক একর ২০ জমিতে ৪ হাজার গাছ লাগিয়েছিলাম। তবে সেখান থেকে ২ শ’র মতো গাছ মারা যায় আর বাকিগুলো থেকে ফল সংগ্রহ চলছে। প্রতি গাছে ১২ থেকে ১৫টি ফল আছে। ৫-৬টি ফলে এক কেজি হচ্ছে। পাইকারি এই ফল ঢাকায় অর্ডারে পাঠাই ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দামে। এ পর্যন্ত ১ মেট্রিক টন বিক্রি করা হয়। ক্ষেত থেকে ক্যাপসিকাম আরও প্রায় ১২০ দিন সংগ্রহ করা যাবে। আবার অনেক গাছেই নতুন করে ফুল থেকে ফল আসছে।
অপর চাষি মামুন মিয়াজী বলেন, ইতোমধ্যে ১ লাখ টাকার বিক্রি হয়েছে। আরও ৩ লক্ষাধিক টাকার বিক্রির আশা করছি । সাধারণত ক্ষেত থেকে তুলে ফলগুলো প্যাকেজিং করে ঢাকায় পাঠানো হয়।
ক্যাপসিক্যাম ক্ষেতে আসা দর্শনার্থী জহির, এনামুল বলেন, নতুন একটি ফল চাষ হয়েছে শুনে এখানে এসেছি। এ ফল আগে আমরা কোনোদিন দেখিনি। বিদেশি এ ফল আমাদের মতলব উত্তরে চাষ হচ্ছে, দেখে খবই ভালো লাগছে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, ক্যাপসিকামের মূল শক্রু এফিডজ্যাসিড জাতীয় কিছু পোকা। এই পোকা দমনে বিষমুক্ত ইয়োলো ও ব্লু ট্রাপ ব্যবহার করতে হবে। এই পোকা না লাগলে ফলন অনেক ভালো হয়। মামুনের মতো শিক্ষিত যুবকরা আধুনিক কৃষি কাজে আসলে সফল হওয়া সম্ভব।
নিরুল ইসলাম মনির
মতলব উত্তর, চাঁদপুর