দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও ইন্টারনেট সংযুক্তির আওতার বাইরে থাকবে না: টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য দেশের প্রতিটি মানুষকে ইন্টারনেট সংযুক্তির আওতায় আনতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় উন্নত বিশ্বের সমান্তরালে আমরা চতুর্থ বা পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের অংশ গ্রহণের সক্ষমতা অর্জন করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্মার্ট সংযুক্তি অপরিহার্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযুক্তির আওতার বাইরে থাকবে না ।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিটিআরসি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম আয়োজিত বাংলাদেশের সকল মানুষকে ক্ষমতায়িত করতে ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক অধিবেশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

ডাক ও টেলিযোাগাযোগ মন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য টেলিযোগাযোগ প্রযু্ক্তি খাতে উদ্ভাবন ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, আমাদের বড় সমস্যার নাম ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ। টেলিযোগাযোগ খাতে আরএন্ডডি তে যথাযথ বিনিয়োগ করতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সেই বীজটিকে চারা গাছ থেকে আজ তা মহিরূহে রূপ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে দেশে প্রতি এমবিপিএস ইন্টানেটের দাম ছিলো ৭৮ হাজার টাকা, ২০০৮ সালে তা ২৭ হাজার টাকা এবং বর্তমানে তা ৬০ টাকায় নির্ধারিত হয়েছে। সে সময় দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ব্যান্ডউদথ ব্যবহৃত হতো তা বেড়ে বর্তমানে ৪১০০ জিবিপিএস-এ উন্নীত হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২জি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করেন। তার হাত ধরেই ২০১৩ সালে থ্রিজি, ২০১৮ সালে ফোরজি এবং ২০২১ সালে ফাইভজি যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, এদেশের মানুষ খুবই মেধাবী। তারা সহজেই প্রযুক্তি আয়ত্তে আনতে সক্ষম। এ প্রসংগে তিনি সীসার হরফের পরিবর্তে ডিজিটাল যন্ত্রে বাংলা প্রবর্তনের পর দৈনিক পত্রিকাসহ প্রকাশনা শিল্পে কর্মরত সীসার হরফে কম্পজিটের কাজে কর্মরতদের চাকুরি হারানোর আশংকা সৃষ্টি হলে তিনি কম্পজিটরদের তোপের মুখে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে শ্লোগান- আন্দোলন শুরু হয় উল্লেখ করে তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। পরবর্তীতে তাদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে তাদের ডিজিটাল প্রকাশনার কারিগর হিসেবে তৈরি করার পর তাদের প্রিয়ভাজনে পরিণত হন এবং তাদের হাতেই ডিজিটাল যন্ত্রে বাংলা প্রকাশনা জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হয় বলে জানান ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাভাষার এই উদ্ভাবক।

অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আবদুস সালাম, এমটব এর জেনারেল সেক্রেটারি লে: কর্নেল (অব:) মোহাম্মদ জুলফিকার, সাংবাদিক রাশেদ মেহেদী এবং বিআইজিএফ সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী এ এইচ এম বজলুর রহমান। বক্তারা টেকসই ইন্টারনেট একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য অপরিহার্য উল্লেখ করেন। ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে অনুষ্ঠানে বক্তারা ইন্টারনেট বিকাশে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও ইন্টারনেট গতি বৃদ্ধি এবং সহজলভ্য করার বিষয়ে করণীয় বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title