মহামারি করোনা মোকাবিলায় জরুরি প্রয়োজনে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমাতে টিকাদানে অধিক গুরুত্ব দিয়ে মহামারিকালে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে বাজেটে এবারও ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার সরকারের লক্ষ্যের কথাও বাজেট বক্তৃতায় তুলে ধরেন। চলতি অর্থবছরের বাজেটেও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যে কোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি পরিস্থিতিতে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের জন্য বরাদ্দ বাড়ছে ৩ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিগত বাজেটে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য আমরা বিপুল বরাদ্দ রেখেছিলাম। এছাড়া যে কোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রেখেছিলাম। তবে প্রথম প্রাদুর্ভাবের পর বছর ঘুরে এলেও বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রকোপ এখনো বিদ্যমান।’

করোনা ভাইরাস মহামারিকালে গতবারের মতো এবারও স্বাস্থ্য ও চিকিত্সা গবেষণা খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সমন্বিত স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল’ থেকে করোনা ভাইরাস, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন ভাইরাসের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিত্সা শিক্ষার বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে। চলতি বাজেটেও এই খাতে সমপরিমাণ টাকা বরাদ্দ ছিল।

স্বাস্থ্যের অন্যান্য বরাদ্দ ব্যয় করতে না পারার মতো এই বরাদ্দের টাকাও ব্যয় হয়নি। এবার বাজেট প্রস্তাবে এ বরাদ্দ নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে গত বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর স্বাস্থ্য খাতের দুর্বল দিকগুলো সামনে আসে। অবকাঠামোসহ অন্যান্য দুর্বলতার মধ্যে গবেষণার দিকটি নিয়ে অনেক কথা হয়। সার্বিক জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে গবেষণায় ব্যয়ও খুবই কম। এমন প্রেক্ষাপটে গত অর্থবছরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যের গবেষণার বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেটে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, পিপিই এবং ভ্যাকসিন আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস রোধসহ দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতির প্রস্তাব করছি। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, পিপিই এবং ভ্যাকসিন আমদানি, উত্পাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা বহাল। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে মানুষের স্যানিটেশন সুবিধা আরো সুলভ করার লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ‘লং প্যান’-এর ওপর থেকে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হলো।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title