তিন বউ রেখে অন্যের বউকে নিয়ে ভাগিয়েছেন মসজিদের ইমাম

বাগমারা (রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ বাগমারায় আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু নামে এক ব্যক্তি করতেন মসজিদে  ইমামতি তার পাশাপাশি কবিরাজিও করতেন। তাই এলাকায় তিনি বাচ্চু হুজুর নামেই পরিচিত।  আগের তিনটি  স্ত্রী  আছে তার। তৃতীয় স্ত্রীর কোনো সন্তান না হলেও বাকি দুই স্ত্রীর ঘরে সাত ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তবুও বিয়ের স্বাদ মেটেনি বাচ্চুর। পালিয়েছেন অন্যের স্ত্রী নিয়ে।

বাচ্চুর বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা গ্রামে। তিনি একই উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের বাগিচাপাড়া এলাকায় মসজিদের ইমাম ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাগমারা থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ করেন ওই নারীর ২২ বছর বয়সী ছেলে। পরিবারের মান-সম্মানের দিকে তাকিয়ে প্রথমে বিষয়টি কাউকে না জানালেও মামলার কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান তিনি।

জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী প্যারালাইসিস রোগী ছিলেন। কবিরাজি চিকিৎসার জন্য নিয়মিত তার বাসায় যেতেন বাচ্চু। একই সঙ্গে ওই নারীকে নিয়মিত কুরআন শিক্ষাও দিতেন। কিছুদিন পরই ওই নারীর ছেলেদের সন্দেহ হয়। এরপর বাচ্চুকে বাসায় আসতে নিষেধ করেন। তবুও তিনি ঘোরাঘুরি করতেন বাড়ির আশপাশে।

১১ এপ্রিল নিজের বাবার বাড়ি বেড়াতে যাবেন বলে ঘর থেকে বের হন ওই নারী। এরপর আর না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারেন তাকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছেন বাচ্চু হুজুর।

নারীর বড় ছেলে ভাষ্যমতে, বাচ্চু হুজুরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নিষেধ করেছি। এরপরও তিনি বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করতেন। তিনি পানিপড়া ও তাবিজ-কবজ করতে জানেন। আমার মাও তার তাবিজ-কবজ ও পানি পড়ার খপ্পরে পড়েছেন। এছাড়া বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে মাকে প্রভাবিত করে বাচ্চু হুজুর দুই লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ নিয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, বাচ্চুর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা তাদের সন্ধান চাই। আমরা তার শাস্তি চাই। যেন আর কোনো পরিবারের ক্ষতি না করতে পারে।

বাচ্চুর কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, বাচ্চুকে নিয়ে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা নতুন কিছু নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। বাগমারায় হামিরকুৎসা গ্রামে রয়েছে তার প্রথম স্ত্রী। সেই পরিবারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। আবার নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার রামসার কাজীপুর গ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে রয়েছে দুই মেয়ে ও এক ছেলে।

তারা আরো জানান, চট্টগ্রামে তাবলিগ জামাতে গিয়ে নারী কেলেঙ্কারিতে ধরা পড়েন বাচ্চু। এরপর বাধ্য হয়ে সেখানেও বিয়ে করতে হয়। তবে সেই স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই।

গোয়ালকান্দি বাগিচাপাড়া মসজিদের সাবেক সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের মসজিদে ইমাম থাকার সময়ে অন্য নারীদের সঙ্গেও পরকীয়ায় লিপ্ত হন বাচ্চু হুজুর। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে তাকে ইমামতি থেকে অব্যাহতি দেয় মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে ইমাম আব্দুর রাজ্জাক ওরফে বাচ্চু হুজুরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন,এই  ঘটনাটি আমরা এখনো শুনিনি। তবে এমন অভিযোগ কিংবা জিডি থানায় নথিভুক্ত হলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title