ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই গণঅভ্যুত্থান: রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। সোমবার (৩০ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগ দাখিল করা হয়। এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেওয়ার শুনানি হবে বেলা ১১:৩০ টায়।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত এই মামলায় তদন্ত সংস্থা এর আগে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করে, যেখানে আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসে।

কি ঘটেছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে?

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়। আন্দোলনের মধ্যেই ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। সেদিন দুই হাত প্রসারিত অবস্থায় আবু সাঈদকে গুলি করার ভিডিও সংবাদমাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র-জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, সরকারি হিসাবে সাড়ে আটশ’র বেশি মানুষ নিহত হন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২৬ জুন শুনানির দিন ধার্য করে। আদালতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ এবং এস এম মঈনুল করিম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষে ছিলেন রাশেদুল হক খোকন ও দেলোয়ার হোসেন সোহেল।

আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় কারা জড়িত?

প্রসিকিউশনের ভাষ্যমতে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় সরাসরি গুলি চালান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগের ইমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে উসকানি ও সহায়তা করেন। অভিযুক্ত চারজন অন্য মামলায় গ্রেপ্তার অবস্থায় ছিলেন।

সরকার পতন ও প্রেক্ষাপট

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ সরকার তুমুল আন্দোলন, মৃত্যু এবং সরকারি সম্পত্তিতে হামলার মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারত গমন করেন। আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ট্রিগার হিসেবে আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ড জুলাই গণঅভ্যুত্থান-কে আরও তীব্র করে তোলে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উদ্যোগ

২০১০ সালে গঠিত এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে হত্যা, গুম এবং গুলি চালনার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে। এর ফলে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নতুন একটি অধ্যায় শুরু হয়েছে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

জুলাই গণঅভ্যুত্থান: রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

আপডেট সময় : ১১:৫৫:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। সোমবার (৩০ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগ দাখিল করা হয়। এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেওয়ার শুনানি হবে বেলা ১১:৩০ টায়।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত এই মামলায় তদন্ত সংস্থা এর আগে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করে, যেখানে আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসে।

কি ঘটেছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে?

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়। আন্দোলনের মধ্যেই ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। সেদিন দুই হাত প্রসারিত অবস্থায় আবু সাঈদকে গুলি করার ভিডিও সংবাদমাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র-জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, সরকারি হিসাবে সাড়ে আটশ’র বেশি মানুষ নিহত হন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২৬ জুন শুনানির দিন ধার্য করে। আদালতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ এবং এস এম মঈনুল করিম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষে ছিলেন রাশেদুল হক খোকন ও দেলোয়ার হোসেন সোহেল।

আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় কারা জড়িত?

প্রসিকিউশনের ভাষ্যমতে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় সরাসরি গুলি চালান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগের ইমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে উসকানি ও সহায়তা করেন। অভিযুক্ত চারজন অন্য মামলায় গ্রেপ্তার অবস্থায় ছিলেন।

সরকার পতন ও প্রেক্ষাপট

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ সরকার তুমুল আন্দোলন, মৃত্যু এবং সরকারি সম্পত্তিতে হামলার মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারত গমন করেন। আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ট্রিগার হিসেবে আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ড জুলাই গণঅভ্যুত্থান-কে আরও তীব্র করে তোলে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উদ্যোগ

২০১০ সালে গঠিত এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে হত্যা, গুম এবং গুলি চালনার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে। এর ফলে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নতুন একটি অধ্যায় শুরু হয়েছে।