ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কুষ্টিয়া মিরপুর মাদকবিরোধী অভিযানে ফেন্সিডিল, ইয়াবা ও পলিথিন উদ্ধার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়াণ দিবস: বিশ্বকবির প্রতি বাঙালির শ্রদ্ধাঞ্জলি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ ও নির্বাচন ঘোষণা: বিএনপির প্রতিক্রিয়া ঠাকুরগাঁও কলেজছাত্র আটক: বিজয় কনসার্টে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ইসরায়েলের গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক পিটার হাস এনসিপি বৈঠক গুজব: তিনি আছেন ওয়াশিংটনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি ২০২৬ – মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা ভারতের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি, ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা সদরপুরে বিএনপির আনন্দ মিছিল ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়াণ দিবস: বিশ্বকবির প্রতি বাঙালির শ্রদ্ধাঞ্জলি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫ ৩ বার পড়া হয়েছে

আজ ২২শে শ্রাবণ, বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কবি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণ দিবস। রবীন্দ্রনাথ তার উজ্জ্বল প্রতিভা দিয়ে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন বিশ্ব দরবারে, পেয়েছেন বিশ্বকবির সম্মান।

বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় অসামান্য অবদান রাখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বাংলা সনের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজি ১৮৬১ সালের ৭ মে) পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মা সারদাসুন্দরী দেবী। বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ কলকাতায় পৈতৃক বাসভবনে ইহলোক ত্যাগ করেন তিনি।

রবীন্দ্রনাথ কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তার পিতৃপুরুষের আবাসভূমি বাংলাদেশের খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার অন্তর্গত ঘাটভোগ ইউনিয়নের পিঠাভোগ গ্রামে। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার ‘অভিলাষ’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন।

১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। সেসময় থেকেই কবির লেখা দেশ-বিদেশে প্রকাশিত হতে থাকে। উপন্যাস, নাটক, সংগীত, প্রবন্ধ, চিত্রকলা বা দর্শন—বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে বিচরণ করেননি রবীন্দ্রনাথ। অসাধারণ সৃজনশীলতা, নিবিড় জীবনবোধ ও ভাষার অনন্য প্রকাশভঙ্গি দিয়ে সাহিত্যের সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের নানা ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত হয়েছে। নানা দেশের পাঠ্যসূচিতে তার লেখা সংযোজিত হয়েছে।১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বলা হয়ে থাকে, রবীন্দ্রনাথের লেখার প্রধান উপজীব্য ছিল জীবনানুভুতি যেখানে বাঙালির জাতিসত্তা, আশা-আকঙ্খা-নিরাশার আবেদনগুলো স্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। এটি এমন প্রবলভাবে এসেছে যে তিনিই হয়ে ওঠেছেন বাঙালির জাতিসত্তা ও বোধের এক অপার আধার।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কাব্যরচনা শুরু করেন। তার প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫২। তবে বাঙালি সমাজে তার জনপ্রিয়তা প্রধানত সংগীতস্রষ্টা হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ প্রায় দুই হাজার গান লিখেছিলেন। কবিতা ও গান ছাড়াও তিনি ১৩টি উপন্যাস, ৯৫টি ছোটগল্প, ৩৬টি প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ এবং ৩৮টি নাটক রচনা করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সমগ্র রচনা রবীন্দ্র রচনাবলী নামে ৩২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া তার সামগ্রিক চিঠিপত্র উনিশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রবর্তিত নৃত্যশৈলী ‘রবীন্দ্রনৃত্য’ নামে পরিচিত।

বিংশ শতাব্দীর বাঙালি সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ তথা দার্শনিক অমর্ত্য সেন রবীন্দ্রনাথকে এক ‘হিমালয়প্রতিম ব্যক্তিত্ব’ ও ‘গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক ও বহুমাত্রিক সমসাময়িক দার্শনিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথকে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি’ হিসেবেও বর্ণনা করা হয়ে থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী ‘পঁচিশে বৈশাখ’ ও প্রয়াণবার্ষিকী ‘বাইশে শ্রাবণ’ আজও বাঙালি সমাজে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়ে থাকে। এই উপলক্ষে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, শান্তিনিকেতন আশ্রম ও শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে প্রচুর জনসমাগম হয়। শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ-প্রবর্তিত ধর্মীয় ও ঋতুউৎসবগুলির মাধ্যমেও তাকে শ্রদ্ধা নিবেদনের রীতি অক্ষুণ্ণ আছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে ও অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া বা রবীন্দ্ররচনা পাঠের রেওয়াজও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এগুলো ছাড়াও কবির সম্মানে আরও কতকগুলো বিশেষ ও অভিনব অনুষ্ঠান পালন করা হয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের আরবানাতে আয়োজিত বার্ষিক ‘রবীন্দ্র উৎসব’, কলকাতা-শান্তিনিকেতন তীর্থ-পদযাত্রা ‘রবীন্দ্র পথপরিক্রমা’ ইত্যাদি।কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। ভারতের জাতীয় সংগীতটিও কবির লেখা। কবি তার গান দিয়েও চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন শত কোটি মানুষের হৃদয়ে।

 

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়াণ দিবস: বিশ্বকবির প্রতি বাঙালির শ্রদ্ধাঞ্জলি

আপডেট সময় : ০২:০০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫

আজ ২২শে শ্রাবণ, বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কবি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণ দিবস। রবীন্দ্রনাথ তার উজ্জ্বল প্রতিভা দিয়ে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন বিশ্ব দরবারে, পেয়েছেন বিশ্বকবির সম্মান।

বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় অসামান্য অবদান রাখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বাংলা সনের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজি ১৮৬১ সালের ৭ মে) পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মা সারদাসুন্দরী দেবী। বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ কলকাতায় পৈতৃক বাসভবনে ইহলোক ত্যাগ করেন তিনি।

রবীন্দ্রনাথ কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তার পিতৃপুরুষের আবাসভূমি বাংলাদেশের খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার অন্তর্গত ঘাটভোগ ইউনিয়নের পিঠাভোগ গ্রামে। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার ‘অভিলাষ’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন।

১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। সেসময় থেকেই কবির লেখা দেশ-বিদেশে প্রকাশিত হতে থাকে। উপন্যাস, নাটক, সংগীত, প্রবন্ধ, চিত্রকলা বা দর্শন—বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে বিচরণ করেননি রবীন্দ্রনাথ। অসাধারণ সৃজনশীলতা, নিবিড় জীবনবোধ ও ভাষার অনন্য প্রকাশভঙ্গি দিয়ে সাহিত্যের সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের নানা ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত হয়েছে। নানা দেশের পাঠ্যসূচিতে তার লেখা সংযোজিত হয়েছে।১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বলা হয়ে থাকে, রবীন্দ্রনাথের লেখার প্রধান উপজীব্য ছিল জীবনানুভুতি যেখানে বাঙালির জাতিসত্তা, আশা-আকঙ্খা-নিরাশার আবেদনগুলো স্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। এটি এমন প্রবলভাবে এসেছে যে তিনিই হয়ে ওঠেছেন বাঙালির জাতিসত্তা ও বোধের এক অপার আধার।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কাব্যরচনা শুরু করেন। তার প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫২। তবে বাঙালি সমাজে তার জনপ্রিয়তা প্রধানত সংগীতস্রষ্টা হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ প্রায় দুই হাজার গান লিখেছিলেন। কবিতা ও গান ছাড়াও তিনি ১৩টি উপন্যাস, ৯৫টি ছোটগল্প, ৩৬টি প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ এবং ৩৮টি নাটক রচনা করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সমগ্র রচনা রবীন্দ্র রচনাবলী নামে ৩২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া তার সামগ্রিক চিঠিপত্র উনিশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রবর্তিত নৃত্যশৈলী ‘রবীন্দ্রনৃত্য’ নামে পরিচিত।

বিংশ শতাব্দীর বাঙালি সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ তথা দার্শনিক অমর্ত্য সেন রবীন্দ্রনাথকে এক ‘হিমালয়প্রতিম ব্যক্তিত্ব’ ও ‘গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক ও বহুমাত্রিক সমসাময়িক দার্শনিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথকে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি’ হিসেবেও বর্ণনা করা হয়ে থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী ‘পঁচিশে বৈশাখ’ ও প্রয়াণবার্ষিকী ‘বাইশে শ্রাবণ’ আজও বাঙালি সমাজে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়ে থাকে। এই উপলক্ষে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, শান্তিনিকেতন আশ্রম ও শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে প্রচুর জনসমাগম হয়। শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ-প্রবর্তিত ধর্মীয় ও ঋতুউৎসবগুলির মাধ্যমেও তাকে শ্রদ্ধা নিবেদনের রীতি অক্ষুণ্ণ আছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে ও অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া বা রবীন্দ্ররচনা পাঠের রেওয়াজও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এগুলো ছাড়াও কবির সম্মানে আরও কতকগুলো বিশেষ ও অভিনব অনুষ্ঠান পালন করা হয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের আরবানাতে আয়োজিত বার্ষিক ‘রবীন্দ্র উৎসব’, কলকাতা-শান্তিনিকেতন তীর্থ-পদযাত্রা ‘রবীন্দ্র পথপরিক্রমা’ ইত্যাদি।কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। ভারতের জাতীয় সংগীতটিও কবির লেখা। কবি তার গান দিয়েও চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন শত কোটি মানুষের হৃদয়ে।