কদরের রাতে ফিলিস্তিনি মুসল্লির উপর ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখন্ড জেরুসালেমের মসজিদুল আকসায় রমজানের পবিত্র কদরের রাতের ইবাদতের জন্য শনিবার রাতে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৯০ হাজার ফিলিস্তিনি মুসল্লি। কিন্তু ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা মোকাবেলা করেই রাত কাটলো তাদের।

শুক্রবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনার পরও কদরের রাত পালনে মসজিদুল আকসায় আসেন বহু ফিলিস্তিনি। ইসরাইলি চেকপোস্টের বাধা সত্ত্বেও তারা ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম এই স্থানে জড়ো হন।

এশা ও তারাবির নামাজের পর ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা শুরু করে। এই সময় অনেক মুসল্লিকে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে হামলায় অন্তত ৯০ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীরা।

এছাড়া জেরুসালেমের পুরনো দুর্গ শহরের দামিশক গেটের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও রাবার জড়ানো ধাতব গুলি, টিয়ার গ্যাস ও স্মোক গ্রেনেড নিয়ে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী।

অল্প কিছু দূরেই শেখ জাররাহ মহল্লায় ইসরাইলি আদালতের ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের তৈরি শিবিরে তাণ্ডব চালায় ইসরাইলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীরা।

এর আগে শুক্রবার রাতে ইসরাইলি বাহিনী মসজিদুল আকসাসহ অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের বিভিন্ন স্থানে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় অন্তত দুই শ’ পাঁচ জন আহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সূত্রে জানা যায়।

গত ২৫ এপ্রিল জেরুসালেমের ইসরাইলি ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ছয় ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের বাড়ি ইসরাইলি নাগরিকদের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন। এতে করে ১০ শিশুসহ ৪০ ফিলিস্তিনি বাসিন্দা তাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের বাস করা ঠিকানা থেকে উচ্ছেদের শঙ্কায় রয়েছেন।

ইসরাইলি আদালতের ওই আদেশের পর থেকেই জেরুসালেমসহ পুরো ফিলিস্তিনে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

জেরুসালেমে ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে পশ্চিম তীর ও গাজায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। একইসাথে ইসরাইলে নাজারেথ ও জাফাসহ ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে মসজিদুল আকসায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এক সমাবেশে ভাষণে তিনি ইসরাইলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, জেরুসালেমে হামলা সকল মুসলমানের ওপর হামলা এবং সকল মুসলমানের দায়িত্বই জেরুসালেমের সম্মান রক্ষা করা।

এছাড়াও সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর জেরুসালেমে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।

সোমবার ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীর পুরো জেরুসালেম দখলের স্মরণে জেরুসালেম দিবস পালন করতে যাচ্ছে ইসরাইল। একই দিনে ইসরাইলি সুপ্রিম কোর্টের শেখ জাররাহ মহল্লায় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের আদেশের আপিলে রায় ঘোষণার দিন রয়েছে।

সূত্র : মিডল ইস্ট আই

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title