কোটি টাকার সেতু, নেই পানির প্রবাহ — ২০১ একর জমিতে চাষাবাদে চরম বিপাকে কৃষক
কোটি টাকার সেতু, নেই পানির প্রবাহ — ২০১ একর জমিতে চাষাবাদে চরম বিপাকে কৃষক

- আপডেট সময় : ১১:৪৬:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে
জেলা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকি ইউনিয়নের গড়ের মাঠের ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে প্রায় দুবছর আগে। এর পর থেকে স্থানীয় একটি মহলের দখলে চলে যাই ব্রিজে নিচ দিয়ে বয়ে চলা ক্যানালের অধিকাংশ জাইগা। এর ফলে স্থানীয় কৃষকদের প্রায় দুইশো একর ফসলী জমির আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। এমনিতেই রয়েছে স্থায়ী জলবদ্ধতা। নিচু এলাকা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে ডাঙ্গার পানি প্রবেশ করে। পানি নিষ্কাশনের খালগুলো নিয়মিত সংস্কার করা না হাওয়ার । প্রতিবছর এ অঞ্চলের কৃষকদের শেষমেষ তাদের সে স্বপ্ন পানিতে তলিয়ে যায়। সঠিক সময়ে পানি না পাওয়ায় তৈরী হয় জলাবদ্ধতা এতে করে ফসল উৎপাদনে ক্ষতির মুখে এখানকার কৃষকেরা। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন দ্রুতই সমস্যা নিরসনে এলজিডির সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, সদকী ইউনিয়নের তারাপুর গড়ের মাঠে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি চালু হয়েছে দুই বছর আগে। তবে সেতু নির্মাণের সময় দেওয়া অস্থায়ী বাঁধটি আজও সরানো হয়নি। ফলে অন্তত ৪ শতাধিক বিঘা জমি এখন চরম জলাবদ্ধতায়। ক্ষতির মুখে পড়েছেন শতাধিক কৃষক। স্থানীয় প্রকৌশলী অফিস সূত্র জানায়, ২৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় ২ কোটি ৪৯ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা।
২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স নূর কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে চুক্তি হয়, এবং কাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের শেষ দিকে। কিন্তু নির্মাণকালে তৈরি করা অস্থায়ী বাঁধটি ২ বছরেও সরানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেতুর নিচের বাঁধ অপসারণ না করায় এই মাঠে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা এতে করে স্থানীয় কৃষকদের গত কয়েক বছর ধরেই তারা চাষাবাদ করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অথচ এই জলবদ্ধতার নিরসনে কেউ নিচ্ছেন না এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ। এতে শতাধিক কৃষক ঠিকমত করতে পারছেন না চাষ এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। এবিষয়ে একাধিকবার কতৃপক্ষকে জানানো হলেও ফলস্বরূপ কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যাইনি।
কৃষক সুজন বলেন, ব্রিজ তৈরির সময় যে পাইলিং করা হয়েছিল এবং মাটি ভরাট করা হয়। সেই মাটি এবং পাইলিং অপসারণ করা হয়নি। এর ফলে কৃষকরা ঠিক মতো চাষ করতে পারছে না। অতিদ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কৃষকরা চরম ভোগান্তিতে পরবে।
স্থানীয় কৃষক মমিন হোসেন বলেন, শ’ শ’ বিঘা জমিতে পানির জলাবদ্ধতার কারণে। বছরের পর বছর আবাদী জমি পানির নিচে পড়ে আছে। প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদলের। ব্রিজের নিচ থেকে মাটি অপসারণ খুব একটা কঠিন কাজ না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিরসনের জন্য অনুরোধ করছি।
সদকী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান , মিনহাজুল আবেদিন দ্বীপ বলেন, ব্রীজের নিচে মাটি সড়ানো হলে। এখানকার কৃষকরা উপকৃত হতো। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হবে।এখন এই এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষের দাবী সেতুর নিচের পাইলিং ও মাটি অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে কৃষকের ফসল উৎপাদন উপযোগী করার।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা, এস এম মিকাইল ইসলাম, বলেন, এলজিইডির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুষ্টিয়া নিবার্হী প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল রাজ্জাক বলেন, কৃষকদের সমস্যা নিরসনে স্থানীয় প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে বাঁধ অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।