বগুড়ায় ইউএনও’র গাড়িতে হামলা ,১৪জনসহ অজ্ঞাতনামা ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়া প্রতিনিধি: অবৈধ বালু মহালে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করার সময় হামলার শিকার হন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলী সেখ। এসময় ভাংচুর করা হয় তার ব্যবহৃত গাড়ি। এ ঘটনায় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসের চেইনম্যান উজ্জল কুমার পাল ও নৈশ্যপ্রহরী মুঞ্জুরুল হক বাচ্চু আহত হন। তাদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
৩ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার শেরপুরের নলডেঙ্গীপাড়া- গজারিয়া গ্রামে বাঙালী নদীতে বালু মহল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওইদিন রাতেই উপজেলা ভূমি অফিসের নৈশ্যপ্রহরী মুঞ্জুরুল হক বাচ্চু বাদি হয়ে ১৪ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা প্রায় ৯০ জনের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় শনিবার রাতেই থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মেহের আলীর ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন (২৬), মৃত আজিজার রহমানের ছেলে ওসমান গনি (২৮), গজারিয়া মধ্যপাড়ার মো. জাফর প্রামাণিকের ছেলে আলম প্রামাণিক (৩৫), তোজাম প্রামাণিকের ছেলে ইব্রাহিম প্রামাণিক (২০), গোলাম প্রামাণিকের ছেলে শাহীন শাহ (২০), গোলাম নবীর ছেলে মেহেদী (২৫), খামারকান্দি ইউনিয়নের নলডেঙ্গী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে রুবেল আহমেদ (৩৫) এবং একই গ্রামের আশরাফের ছেলে ফরহাদ হোসেন (২৭) কে আটক করেছে।

জানা যায়, উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালায় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ। অভিযানে গিয়ে বালু মহল এলাকায় বালু উত্তোলনকারীদের অনেক ডাকাডাকি করে তাদের না পেয়ে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত পাইপ অপসারনের সময় হঠাৎ করে অনেকগুলো লোক এসে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ইএনও’র গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে। এতে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসের চেনম্যান উজ্জল মোহন্ত ও নৈশ্যপ্রহরী মুঞ্জুরুল হক বাচ্চু গুরুতর আহত হয়। পরে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে গিয়ে ইউএনও ও আহত কর্মচারীদের উদ্ধার করে। তবে বাঙালী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী বালুদস্যুরা ও তাদের ভাড়াটে লোকজন এই হামলা করেছে বলে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ আরো জানান, ঘটনার দিন দুপুরের পর থেকেই উপজেলার শেরুয়া বটতলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। এসময় খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া-নলডাঙ্গি এলাকায় বাঙালি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর আসে। পরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু সেখানে কাউকে না পাওয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সরঞ্জামগুলো খোলা হচ্ছিল। এ সময় বালু উত্তোলনকারীদের ভাড়াটে লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে তাদেরকে ঘিরে ফেলে। একইসঙ্গে চড়াও হয়। এমনকি তারা উত্তেজিত হয়ে গাড়িতে হামলা করে। এসময় তার সঙ্গে অভিযানে থাকা ওই দুইজন সদস্য বাধা দিতে গেলে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করে আহত করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আসার পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, খবর পেয়েই অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। একইসঙ্গে ইউএনও সহ সকলকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং ৮ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title