রাজশাহীতে বালু উত্তোলনে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র, বৃদ্ধি পাচ্ছে সংঘর্ষ

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী : রাজশাহীর পদ্মা নদী প্রাকৃতিক জলজ সম্পদ। এই নদীকে কেন্দ্র করে নানা মূখি ব্যবসা বানিজ্য কায়েম করার লক্ষে প্রায় চলছে দ্ব›দ্ব। বালুর রাজত্ব কায়েমের লক্ষে দুই দল বিভক্ত হয়ে দফায় দফায় হামলা। কঠোর নিরাপত্তায় পুলিশ কাজ করছে।
নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রজাতির বনজ ও ফলজ গাছ। সেই গাছের ডালে বাসা বাধঁছে বিভিন্ন পাখি। নদীর চরে চাষাবাদ হচ্ছে রবি শষ্য, গম, আখ, ধান এবং শাক সবজি। অন্যদিকে পদ্মার ইলিশসহ চেনা ও অচেনা অনেক রকমের মাছ। যা মানবদেহের জন্য সুষম খাদ্যেও যোগান দিয়ে চলেছে। অথচ ওই দিকে লক্ষ না করে নদী থেকে বালু উত্তোলনে যুদ্ধে মেতে উঠেছে বিভিন্ন মহল। বহু বছর ধরে রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভার নদী এলাকায় বালু উত্তোলন নতুন কিছু নই। ৭০ হাজার টাকার বালু ঘাট এখন সরকারী নিয়ন্ত্রনে কোটি টাকায় টেন্ডার দেয়া হচ্ছে।
দৈনন্দিন সকল প্রকার পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে বালুর মূল্যও থেমে নেই। ১৯ দশকের দিকে চারঘাট বালু ঘাট ৭০-৮০ হাজার টাকায় সরকারী নিয়ন্ত্রনে ১ বছরের জন্য ইজারা দেয়া হতো। বর্তমান ওই ঘাট কোটি টাকায় টেন্ডার হচ্ছে। সম্প্রতী জেলা প্রশাসক এর কার্যলয়ের মাধ্যমে চারঘাট বালু ঘাট ইজারা দেয়া হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্যে ৬ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা ইজারা পেয়েছে মেসার্স সিদ্দিকিয়া এন্টারপ্রাইজ। স্থানীয় সূত্রে জানায়ায়, ইজারা প্রাপ্ত সোহেল জুবেরীর সাথে চারঘাট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন, ৩ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর কাজী নাজমুল হাসানসহ স্থানীয় বালু ব্যাবসায়ীরা সংযুক্ত আছেন।
উপজেলার এই বালু ঘাট নিয়ে কিছু দিন যাবত স্থানীয় আ’লীগ ২ দলের মধ্যে নিস্তব্ধ কন্দলনের গুঞ্জন শুনা যাচ্ছিল। কিন্ত তার বিস্ফোরণ ঘটেছে শুক্রবার দিবাগত রাতে। অজ্ঞাত কিছু ব্যাক্তি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বসত বাড়িতে ২টি ককটেল বøাষ্ট করেছে তার প্রতিপক্ষ উপজেলা দলিয় নেতা কর্মীরা। ৩ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর নাজমুল হাসান জানান, ইজারা সূত্র মূলে বর্তমান বালু ঘাট তাদের নিয়ন্ত্রনে। বালু ঘাটের টোল তারাই আদায় করবে। কিন্ত উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আনোয়ার, নেতা সোনা মিয়া, ছাত্রলীগ সভাপতি আল-মামুন তুষার ক্ষমতার বলে সন্ত্রসী কর্ম কান্ড পরিচালনা করছে।
আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে শিকার করেছেন উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন। শুক্রবার সকালে দৈনিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধি কে বলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, যুবলীগ সভাপতি মামুন, কাউন্সিলর নাজমুল এর নেতৃত্বে বিএনপির ক্যাডার ও একাধিক মামলার আসামী মোতালেব হোসনে (মোতলেব), জীবন, বন্ধন, রনি, মাজদার, রানা, দুঃখু, সুমন, সোহাগ সাবেক বালু ইজারার অফিস ভাংচুর করে নগদ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন অসবাপত্র লুট করে নিয়েগেছে বলে অভিযোগ তুলেছে। ওই সময় তারা আরো অভিযোগ করে বলেন. শুক্রবার দিবাগত রাত অনুমান ১২.৩০টার সময় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির বাড়িতে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ করে পালিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা। পরে মোবাইল বার্তা দিয়ে বলেছে থানায় মামালা করলে ভবিষৎত ভাল হবে না। এই সকল নিশ্চিত করেছে আ’লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার, নেতা সোনা মিয়াসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা বলেন তাদেও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে।
চারঘাট মডেল থানা ওসি জাহাঙ্গির আলম বলেন, শুক্রবার রাতেই ঘটনাস্থল তদন্ত করা হয়েছে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে ২টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় পরিস্থিতি শান্তি বজায় রাখার জন্য থানা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নিয়তি রনি কৈয়রি জানান, নতুন ইজারা প্রাপ্ত মেসার্স সিদ্দিকি এন্টারপ্রাইজ। তার বালু উত্তোলন মহল নিদৃষ্ট করে দেয়া হয়েছে। পদ্মা নদী থেকে নতুন করে বালু উত্তোলন করে বিক্রয় করতে পারবে। চারঘাট বালু মহল নিয়ে দ্ব›দ্ব হয়েছে তা পুলিশ সুপার (স্যার) জানেন। প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে বলে জানান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title