সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পৌঁছে দেবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক অথবা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন নিয়ে হয়রানি বন্ধে পরিস্থিতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাসহ অন্যান্য বরাদ্দ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পৌঁছে দেবে সরকার।

রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ই- পেমেন্টের এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী এই কার্যক্রম উদ্বোধনের পর দুই লাখেরও বেশি ভাতাভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে এক লাখ ৬৮ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা গত জানুয়ারি মাসের ভাতা মোবাইলের মাধ্যমে পাবেন। অন্যরা প্রচলিত পদ্ধতিতে ভাতা পেলেও তাদের ব্যাংক হিসাবসহ অন্যান্য তথ্যাদিও এমআইএসের (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) আওতায় মন্ত্রণালয়ের ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম চলছে। শিগগিরই গেজেটভুক্ত সব বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতাই মোবাইলের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মোবাইলের মাধ্যমে প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখন সাড়ে ৩০০ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় মোবাইলের মাধ্যমে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়। এবার এক লাখ ৬৮ হাজার জনকে মোবাইলের মাধ্যমে ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু তাদের সম্মানী ভাতা নয়, উৎসব ভাতাসহ অন্যান্য সরকারি বরাদ্দের টাকাও মোবাইলের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে। আগামী জুনের মধ্যে সুবিধাভোগী সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকেই মোবাইলের মাধ্যমে ভাতা প্রদান করা হবে।

ই-পেমেন্ট চালু প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাই সময়মতো সম্মানী ভাতা পান না বা ব্যাংকে গিয়ে তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বয়সের কারণেও অনেকে অসুস্থতাসহ নানা সমস্যায় থাকেন। এসব বিবেচনায় নিয়েই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের সহজে ভাতা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ সরকার নিয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৭ জুলাই পাইলট প্রকল্পের (পরীক্ষামূলক) আওতায় প্রথম পর্যায়ে মহেশখালীর ৩৪৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য টাকা দেওয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সারাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ ভাতা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে দেশে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৩৮৭ জন গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা আছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৩৬ হাজার জনের গেজেট দেশের উপজেলাগুলোতে যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। অবশ্য তাদের ভাতা এখনও বন্ধ করা হয়নি।

মোট ভাতাভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই লাখ পাঁচ হাজার ২০৬ জন। তাদের মধ্যে এক লাখ ৯২ হাজার ৫৩২ জন মাসিক ভাতা ১২ হাজার টাকা করে পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া শহীদ, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত ১২ হাজার ৬৭৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রেণিভেদে ১৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাতা পাচ্ছেন। ভাতার পাশাপাশি তারা পাঁচটি উৎসব ভাতা এবং চিকিৎসাসহ সন্তানদের জন্য নির্ধারিত অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title