এথেন্স এর ওমোনিয়া এলাকার কয়েকটি মেস থেকে ১৮৫ জন অভিবাসী গ্রেফতার

প্রদীপ কুমার সরকার, এথেন্স, গ্রিসঃ গ্রিসে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিগত কয়েকদিনে অনেকটা কম বলেই সর্বশেষ খবর অনুযায়ী নিশ্চিত করা গেছে , লকডাউন তুলে দেয়ার পরেও স্বাস্থ্য বিধি-নিষেধ মানার ব্যাপারে সরকার যেমন কঠোর ,ঠিক তেমনি জনগণও অনেকটাই সচেতন। যদিও লকডাউন তুলে দেয়া হয়েছে বা করোনা সংক্রমণ অনেকটাই কম এবং ইউরোপসহ বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি করোনা জয়ী দেশের মধ্যে গ্রীস অন্যতম , তারপরেও করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটসহ কর্মহীনতায় ভুগছেন দেশটির অধিকাংশ নাগরিকসহ অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিশেষ করে যে সকল প্রবাসী বাংলাদেশীরা বৈধ ভাবে বসবাস করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রের অভাবে কর্মসংস্থানের সংকট মোকাবেলায় দিশেহারা ,সরকারের প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত , অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তাগ্রস্থ এ রকম কয়েকজন প্রবাসীকে গত রাতে এথেন্সের কয়েকটি মেসে তল্লাশি চালিয়ে ২১ জন বাংলাদেশিকে জেলে প্রেরণ করেছে স্থানীয় পুলিশ।

নির্ভরযোগ্য সুত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে,গতকাল রাত আনুমানিক ১০টার পরে “সাতোভ্রিয়ান্ড্রো ২৭ নম্বর রোডে বাংলাদেশি আহাদ ভাইয়ের নতুন দোকানের বিল্ডিংয়ে কমপক্ষে ৩/৪ টি মেছের ভিতরে পুলিশ ও সিআইডি তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৫০ জন বাংলাদেশিসহ মোট ১৮৫ জন বিভিন্ন দেশের প্রবাসী কে মোনিয়া থানায় নিয়ে যায় গ্রিক পুলিশ । ৭তলা বিশিষ্ট এই বিল্ডিংয়ে প্রায় ৭/৮ টি বাংলাদেশী মেছ গড়ে উঠেছে ,যেখানে অধিকাংশ বাংলাদেশিদেরই কোন বৈধ কাগজ পত্র নেই এবং একসাথে কয়েকটি মেছ থাকার ফলে এখানে অনেক বাংলাদেশির বসবাস।বাসার নিচে “আহাদ ভাইয়ের দোকানের সুবাদে জানা যায় ,প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে সেখানে অনেকেই আড্ডা জমান।গতকাল মানুষের ভিড় এবং আড্ডা দেখে প্রথমে সিআইডি আসে এবং পরে স্থানীয় থানায় খবর দেয় , পুলিশ দেখে সবাই এলোপাতাড়ি দৌড়ে বিল্ডিংয়ের ভিতরে প্রবেশ করে। পুলিশ এবং সিআইডিও বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে, তারপর শুরু হয় তল্লাশি।পুলিশ দরজা খোলা পেয়ে কয়েকটি মেছে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে ধরপাকড় করে।প্রায় ৫০ জন লোককে থানায় নিয়ে চেক করে, যাদের কাছে বৈধ কাগজ ছিলো তাদেরকে ছেড়ে দেয়। ২য় তলার ২ টা মেছ থেকে ১২ জন আর বাকি আরো ২ টা মেছ এবং নিচের কিছু মেছের মানুষসহ মোট ২১জন এখন জেলে আছেন। গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই অভিবাসন একটি বোরো ধরণের চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন বর্তমান সরকার ,যার সাথে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পুরো সমর্থন ছিল। তুর্কির সাথে এক রকম যুদ্ধ ঘোষণার পরিস্থিতিতে শুরু হয় করোনার সংক্রমণ ,যার কারণে একটু শিথিলতা আসলেও ,করোনা পরবর্তী আবারো অভিবাসন সম্পর্কে নাড়াচাড়া দিয়ে বসেছেন সরকার। গত বছরে পাশকৃত একটি আইনের আওতায় ডিসেম্বরে ৩৩ জনের একটি প্রথম দলকে তুর্কিতে ফেরত পাঠানোর পর বন্ধ ছিল “ডিপোর্টেশন” প্রোগাম। বিশিষ্ট মহলের অনেকেই মনে করছেন ,হয়তো আবারো সেই আইনের আওতায় ২০২০ সালের মধ্যে দশ হাজার অভিবাসীকে তুর্কিসহ নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চালু করছেন অভিবাসন বিরোধী বর্তমান গ্রিক সরকার।

বাংলাদেশ কমিনিটি এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ যাদের কাগজপত্র নেই তাদের সাবধানে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title