ঢাকা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি বার এসোসিয়েশনে আইন, বই বিতরণ করল কবির হোসেন স্মৃতি সংঘ রোদের মেয়ে, নিয়ে ফিরছেন তমালিকা, নতুন গানে মুগ্ধ হবে নতুন প্রজন্ম কক্সবাজারে গোপন বৈঠকের পর পিটার হাসের ঢাকা ত্যাগ, নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত? এক বছর ধরে মর্গে পড়ে আছেন ৬ জন, পরিচয় মেলেনি, অজ্ঞাত হিসেবে আজ হবে দাফন কুড়িগ্রামে বিএনপির বিজয় র‍্যালি ও পথসভা, স্বৈরাচারের পতনের ডাক শিক্ষার্থী রাসেল হত্যার বিচার দাবিতে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ কুষ্টিয়া মিরপুর মাদকবিরোধী অভিযানে ফেন্সিডিল, ইয়াবা ও পলিথিন উদ্ধার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়াণ দিবস: বিশ্বকবির প্রতি বাঙালির শ্রদ্ধাঞ্জলি

নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ

নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:১০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি: নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজার, একটি হুমকিমূলক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, গত ২৩ জুলাই বেরুবারী ইউনিয়নে এক পথসভায় গোলাম রসুল রাজা, নাগেশ্বরী পৌরসভার বানিয়া পাড়া ও ভূষুটারী গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিবাদে ২৭ জুলাই দুপুরে নাগেশ্বরী পৌরসভার ঈদগাহ মাঠ থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, সমাজসেবক, চাকুরিজীবী, শ্রমজীবী ও যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তারা গোলাম রসুল রাজার গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের নেতা মুকুল। তিনি বলেন,
“বানিয়া পাড়া ও ভূষুটারী এলাকার মানুষ শান্তিপ্রিয় ও কর্মঠ। আমরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু গোলাম রসুল রাজা আমাদেরকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী হিসেবে অপবাদ দিয়ে হুমকি দিয়েছেন আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার। এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

এ সময় যুব সমাজের প্রতিনিধি বলেন,
“আমরা এখন পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি। আমাদের শিশু-কিশোরদের জীবন এখন নিরাপত্তাহীনতায়। যতক্ষণ পর্যন্ত গোলাম রসুল রাজা জনতার সামনে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

নাগেশ্বরী উপজেলার এক প্রবীণ নাগরিক সৈয়দ আলী বলেন,
“আমাদের এলাকা চিরকাল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু রাজা উদ্দেশ্যমূলকভাবে উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন। যদি এলাকায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তার দায় পুরোপুরি তাকেই নিতে হবে।”

সমাবেশ শেষে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বরাবর একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে গোলাম রসুল রাজার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গোলাম রসুল রাজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,

“পথসভায় উত্তেজনার বশে আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছি। বেরুবারী ইউনিয়নের এক স্থানীয় বাসিন্দাকে অপমান করা হয়েছিল, সেই ক্ষোভ থেকেই কথাটি বলা হয়।”

তবে স্থানীয়দের মতে, প্রকাশ্য ক্ষমা চাইলেও তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ এমন হুমকি একটি শান্তিপূর্ণ জনপদের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বিষয়টি সম্পর্কে বলেন,

“বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনে আমরা দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেব।”

একইসাথে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব সোহেল হোসাইন কায়কোবাদ জানান,

“ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের ভিত্তিতে সঠিক ও নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক পরিচয়ে দম্ভ দেখিয়ে যদি জনসাধারণকে হুমকি দেয়, তা হলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিতে সাহস না পায়।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ

নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৬:১০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫

জেলা প্রতিনিধি: নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজার, একটি হুমকিমূলক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, গত ২৩ জুলাই বেরুবারী ইউনিয়নে এক পথসভায় গোলাম রসুল রাজা, নাগেশ্বরী পৌরসভার বানিয়া পাড়া ও ভূষুটারী গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিবাদে ২৭ জুলাই দুপুরে নাগেশ্বরী পৌরসভার ঈদগাহ মাঠ থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, সমাজসেবক, চাকুরিজীবী, শ্রমজীবী ও যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তারা গোলাম রসুল রাজার গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের নেতা মুকুল। তিনি বলেন,
“বানিয়া পাড়া ও ভূষুটারী এলাকার মানুষ শান্তিপ্রিয় ও কর্মঠ। আমরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু গোলাম রসুল রাজা আমাদেরকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী হিসেবে অপবাদ দিয়ে হুমকি দিয়েছেন আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার। এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

এ সময় যুব সমাজের প্রতিনিধি বলেন,
“আমরা এখন পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি। আমাদের শিশু-কিশোরদের জীবন এখন নিরাপত্তাহীনতায়। যতক্ষণ পর্যন্ত গোলাম রসুল রাজা জনতার সামনে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

নাগেশ্বরী উপজেলার এক প্রবীণ নাগরিক সৈয়দ আলী বলেন,
“আমাদের এলাকা চিরকাল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু রাজা উদ্দেশ্যমূলকভাবে উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন। যদি এলাকায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তার দায় পুরোপুরি তাকেই নিতে হবে।”

সমাবেশ শেষে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বরাবর একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে গোলাম রসুল রাজার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গোলাম রসুল রাজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,

“পথসভায় উত্তেজনার বশে আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছি। বেরুবারী ইউনিয়নের এক স্থানীয় বাসিন্দাকে অপমান করা হয়েছিল, সেই ক্ষোভ থেকেই কথাটি বলা হয়।”

তবে স্থানীয়দের মতে, প্রকাশ্য ক্ষমা চাইলেও তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ এমন হুমকি একটি শান্তিপূর্ণ জনপদের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বিষয়টি সম্পর্কে বলেন,

“বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনে আমরা দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেব।”

একইসাথে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব সোহেল হোসাইন কায়কোবাদ জানান,

“ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের ভিত্তিতে সঠিক ও নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক পরিচয়ে দম্ভ দেখিয়ে যদি জনসাধারণকে হুমকি দেয়, তা হলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিতে সাহস না পায়।